মানব মস্তিষ্কে চিপ বসানোর অনুমতি পেলো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক

ইলন মাস্কের নিউরালিংক চিপ! বন্ধুরা আশা করি সবাই ভালো আছেন।  আজকে আমরা জানবো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক সম্পর্কে। তাহলে চলুন কথা না বারিয়ে শুরু করি আজকের পোস্ট টি।

ইলন মাস্কের নিউরালিংক চিপ

বিজ্ঞানীরা মানুষের মন নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্যে মানুষের মস্তিস্কে চিপ বসিয়ে নিয়ন্ত্রণের পাশা পাশি রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। অজানাকে জানার এ অদম্য ইচ্ছা থেকে কয়েক বছর আগে নিউরালিংক নামে একটি ব্রেন ইমপ্লান কোম্পানি খুলেছিলেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এতদিন চেষ্টার পর অবশেষ মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে পরীক্ষা চালাতে মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি পেয়েছে নিউরালিংক । চিপ বসিয়ে গবেষণার এ প্রচেষ্টা সফল হলে তা মানব জাতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে গণ্য হবে।

মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি টুইট করে সেই তথ্য জানায় নিউরালিংক । তারা জানায় মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। আমাদের এই প্রযুক্তি এক দিন বহু মানুষকে সাহায্য করতে পারে। তবে মানব দেহে চিপ বসিয়ে কি ধরণের গবেষণা চালানো হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেনি নিউরালিংক।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে তারা ট্রায়েলের জন্য এখনো কাউকে নিয়োগ দেইনি এবং এ ব্যাপারে খুব শীঘ্রই জানানো হবে।এমন যুগান্তকারী অনুমোদনের পর নিউরালিংক বা মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন কেউই তাৎক্ষনিক কোন মন্তব্য করেনি। তবে ইলন মাস্ক দীর্ঘ দিন ধরে চাইছেন মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে গবেষণা চালাতে। তার বিশ্বাস এর মাধ্যমে ইস্থুলতা, অটিজম, অবসাদ ও সিজোফ্রেনিয়া মতো রোগে আক্রন্ত রোগীদের সারিয়ে তুলা সম্ভব। এছাড়া এ চিপ ব্যাবহার করে ওয়েব ব্রাউজিং ও টেলি পেথি অর্থাৎ অন্য ব্যক্তি কি ভাবছে তা জানা যাবে।

গেলো বছরের শেষ দিকে এক ঘোষণা দিয়ে সারা বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছিলো ইলন মাস্ক। নিউরালিংকের  তৈরি করা চিপ নিরাপদ দাবি করে নিজের সন্তানদের মস্তিষ্কে তা বসানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সাল থাকে অন্তত চার বার মাস্ক বলেছেন হিউম্যান ট্রায়েল শুরু করবে নিউরালিংক। তবে ২০২২ সালের শুরুর দিকে মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন মাস্ক। তখন অবশ্য সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলো মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন। গেলো মাসে রয়টার্সকে এ কথা নিশ্চিত করেছেন মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তা। ঐ কর্মকর্তারা জানান মানব দেহে পরীক্ষা চালানোর আগে নিউরালিংকের কয়েকটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন।

নিউরালিংকের তৈরি করা চিপ নিয়ে মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা ছিল ঐ ডিভাইজে ব্যবহার করা লিথিয়াম ব্যাটারি। এই চিপের তার মস্তিষ্কে ভিতর স্থাপনও একটি ইস্যু ছিল। তাছাড়া ব্রেন টিস্যুর ক্ষতি না করে কতোটা  ইরাপদ ভাবে এই ডিভাইজ বের করা যাবে তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলো মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর বেশ কয়েক বার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তদন্তের মুখে পরে নিউরালিংক। যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত দুটি মন্ত্রণালয় নিউরালিংকের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে।

মস্তিষ্কে চিপ বসানোর ধারনাটা নতুন নয়। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রাণীর দেহে দীর্ঘদিন ধরে এই চিপ বসানোর পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিশ্বাস মস্তিষ্কে চিপ বসানোর কারনে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা যেমন সহজ হবে তেমনি টেলি পেতির কারনে মানুষে মানুষে দূরত্ব কমিয়ে আসবে। তবে এই প্রকিয়ার নৈতিক ভিত্তি এবং এটা কতোটা নিরাপদ তা নিয়ে এখন বিতর্ক চলমান। এমন পরিস্থিতিতে নিউরালিংকের এমন অনুমোদন পাওয়া একি সঙ্গে আশা জাগানিয়া এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গো হবার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top