চোখ ওঠার কারন ও প্রতিকার এবং ডাক্তারি পরামর্শ

চোখ ওঠার কারন

চোখ ওঠার কারন! বন্ধুরা চোখ ওঠার বিভিন্ন ধরনের কারণ হয়ে থাকে কিন্তু চোখ উঠলেই আমরা কি কি করব? আর এটি কিভাবে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে ?এই বিষয়েই আজকের পোস্ট। তাহলে চলুন বন্ধুরা কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক, চোখ ওঠা’’ আমাদের পরিচিত অসুখ।

আমাদের দেশে শীতে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগের নাম ‘‘কনজাংটিভাইটিস’’। চোখ উঠলে চোখের সাদা অংশ লাল বা গোলাপি বর্ণ ধারণ করে বলে একে ‘‘পিংক আই’’ বলেও অভিহিত করা হয়।

শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা গেলেও বড়দেরও কনজাংটিভাইটিস হতে পারে

কী এই কনজাংটিভাইটিস; আমাদের চোখের পাতার নিচে ঝিল্লির মতো পাতলা পর্দা যা চোখের সাদা অংশকে ও চক্ষুপল্লবের ভেতরের ভাগকে ঢেকে রাখে যে পর্দা, তার নাম কনজাংটিভা। এই পর্দার প্রদাহ বা ব্যথা কে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস, যা সহজ বাংলায় আমাদের কাছে চোখ ওঠা নামে পরিচিত।

লক্ষণ; চোখের সাদা অংশ লাল বা গোলাপি হয়ে ওঠা, চেখে ভীষণ ব্যথা হওয়া,চোখ ফুলে ওঠা,চোখে বেশি পিচুটি জমা হওয়া,চোখ চুলকানো, চোখে কাটার মতো কিছু বিঁধে আছে এমন অনুভূতি হওয়া, ঘুম থেকে ওঠার পর চোখ খুলতে না পারা, চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়া, আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট হওয়া এছাড়াও, দেখতে অসুবিধা হওয়া, মাথা ব্যথা প্রভূতি উপসর্গ থাকতে পারে।

চোখ ওঠার কারণ; ফুলের রেণু, ধুলোর কণা, পশুপাখির লোম/পালক, দীর্ঘক্ষণ ধরে শক্ত বা নরম কন্টাক্ট লেন্স একনাগাড়ে ব্যবহার করলে চোখের অ্যালার্জি হয়।

এ থেকে কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। সাধারণত স্ট্যাফাইলোকক্কাস, ক্ল্যামাইডিয়া ও গোনোকক্কাসের মতো ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে সংক্রমণ হয়। সংক্রমণ পোকার মাধ্যমে, সংক্রমিত ব্যক্তির চোখ থেকে, আবার প্রসাধন দ্রব্য থেকেও ছড়ায়।

 কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সংক্রমণের কারণ অনুযায়ী করা হয়

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হয়। ভাইরাসজনিত সংক্রমণ সারতে তার নিজস্ব সময় লাগে। ঠান্ডা সেঁক ও আর্টিফিশিয়াল টিয়ার্স বা কৃত্রিম চোখের জল উপসর্গ অনুযায়ী উপশম দিতে সাহায্য করে। অ্যালার্জি ঘটিত কনজাংটিভাইটিসের জন্য অ্যান্টিহিস্টামিনস ও আই ড্রপ দেওয়া হয়।

অধিকাংশ সময় চোখ ওঠা নিজে থেকেই কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায়। তবে এসময় কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। যেমন : চোখে হাত না লাগানো, চোখ চুলকানো থেকে বিরত থাকা।

সংক্রমণ হলে নিজের তোয়ালে রুমাল আলাদা করে ফেলা, অন্য কারও সঙ্গে বিনিময় না করা। কনজাংটিভাইটিস হলে কন্টাক্ট রেন্স ব্যবহার থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা। এসময় চোখে কোনো প্রসাধনী ব্যবহার না করা। যে সব খাদ্যে অ্যালার্জি আছে তা না খাওয়া, কারণ অ্যালার্জি সংক্রমণ অসুখ বাড়াতে পারে।

কীভাবে চোখ উঠার জীবাণু ছড়ায়

১. চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এটি হয়। অপরিষ্কার হাত, আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শে, আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, গামছা ব্যবহারে চোখ উঠতে পারে।

২. অ্যালার্জি ধুলাবালির মাধ্যমে; চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা যেসব কারণে চোখ ওঠে, সেসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

১. যখন আপনার চোখ থেকে ঘন হলুদ কিংবা সবুজাভ হলুদ রঙের ময়লা পদার্থ বের হয়;
২. চোখ ব্যথা থাকলে;
৩. চোখে ঝাপসা দেখতে পেলে অথবা দেখতে সমস্যা হলে;
৪. চোখের সাদা অংশ ফুলে উঠলে কিংবা লাল হয়ে গেলে

চোখ ওঠা রোগের প্রতিকার

১. চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিবারের সবাই কাপড়, তোয়ালে ও অন্যান্য জিনিস আলাদা ব্যবহার করুন।
২. চোখে হাত দেবেন না;
৩. ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ভালোমতো পরিষ্কার করুন;
৪. যেসব জিনিসে অ্যালার্জিক তা থেকে দূরে থাকুন;
৫. সাথে জ্বর সর্দি কাশি থাকলে তার চিকিৎসা নিন।
৬. আক্রান্ত হলে ঘরে বিশ্রাম নিন।
ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত চোখ কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু আশপাশে অনেককেই আক্রান্ত করে বা করতে পারে। তবে চোখ ওঠা রোগী মূলত সে তার নিজের জন্য সমস্যা নয়, বরং অন্যের জন্য সমস্যা। সর্বপরি সাবধানে থাকার চেষ্টা করুন।

আর আক্রান্ত যারা যাচ্ছেন তারা সবসময় চোখে সানগ্লাস ব্যাবহার করুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু/রুমাল রাখুন।বিনা প্রয়োজনে চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কনজাংটিভাইটিস কিন্তু অতিমাত্রায় ছোয়াছে। হাত সবসময় পরিষ্কার রাখুন। আর আপনার ব্যাবহৃত রুমাল/টিস্যু যেখানে সেখানে ফেলা থেকে বিরত রাখুন।(চোখ উঠার চিকিৎসা)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top