দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হাসিনা হারলে বেকায়দায় পরতো ভারত

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪! বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরগরম ভয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গন। এর মাঝেই রোববার বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি বিশ্লেষণ ধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু।

সাংবাদিক প্রণয় শর্মার ঐ প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যদি শেখ হাসিনা হেরে যান তাহলে বাংলাদেশ দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হতে পারে। এমনকি চিন্তিত হয়ে পড়বে ভারত। সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহিংসতা বহু গুনে বেড়ে যেতে পারে।

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়। প্রতিবেশীদের মধ্যে যে ভারত বিরোধী মনোভাব রয়েছে সেখানে দেশটির সবচেয়ে কাছের এবং একমাত্র নির্ভরযোগ্য অংশীদার মনে করা হয় শেখ হাসিনা সরকারকে। ভারত ঐতিহ্যগতভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় শক্তি হিসেবে স্বীকৃত পেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিল্লির সেই অবস্থানকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করে এই অঞ্চলে বেইজিং এর আগ্রহ এবং পদচিহ্ন দিন দিন বাড়ছে।

এইদিকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পশ্চাৎ পসরধ দূর করতে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তা নিশ্চিত করতে নানান শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। নির্বাচনী কারচুপিতে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন। কিন্তু তারপরও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মী, সরকারি সংস্থা ও কর্মকর্তাদের চাপ দিচ্ছে এবং সব রাজনৈতিক দলকে নির্ভয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা বলছে।

প্রনয় শর্মা লিখেছেন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অবস্থানের সুযোগ নিচ্ছে বিরোধী দলগুলো। সরকারকে আক্রমণ করে মিটিং মিছিল করছে বিএনপি। এছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকা জমায়েত সহ অন্যান্য দলও যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের কারণে রাজনৈতিক প্রাণচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, গত দশকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত এবং নির্ভরতার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যা এই দুটি দেশ ছাড়াও এই অঞ্চলের জন্য সুফল বয়ে এনেছে।

 তবে নয়া দিল্লি ও ভারতের আশঙ্কা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো এই সম্পর্ককে হুমকির মুখে খেলতে পারে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন ভিত্তিক এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল ওর্গেলম্যান বলেছেন, বাংলাদেশ মার্কিনীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। কিন্তু কৌশলগতগুরুত্বপূর্ণ নয় এ কারণে বাইডেন্ট প্রশাসন মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ইসুতে বাংলাদেশকে চাপ দিতে পারছেন। সম্প্রতি ভারত ও চীনের একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।

কারণ দুটি দেশী বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। আর এর মধ্যেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের ফলে বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তুলেছেন। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়ানে চীন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে পেরেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে।

তবে উদ্ভূত এমন পরিস্থিতি ভারতের জন্য দেখা দিয়েছে সংকট হিসেবে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারালে নয়া দিল্লিকে বাংলাদেশে একটি বৈরি শক্তির মোকাবেলা করতে হবে।

প্রনয় শর্মার লেখা দ্যা হিন্দুর ঐ প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা নির্বাচনে হেরে গেলে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বহু বছর সংগ্রাম করতে হতে পারে।

পাশাপাশি দেশটি আবারও সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী শক্তির আখড়ায় পরিণত হতে পারে। আওয়ামী লীগের বিদায় শুধুমাত্র ভারতের জন্য নয় সমগ্র অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যদি তা দক্ষিণ এশিয়ায় আরেকটি অস্থিরতা ও সহিংসতার সূচনা করে।

বন্ধুরা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ আপনার কাছে কতটুকু যুক্তিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে তা আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন এবং বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে বলে আপনার মনে হয় তা অবশ্যই আমাদের জানাতে ভুলবেন না। বাংলাদেশের রাজনীতি ও কৌশলগত আন্তর্জাতিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের পরবর্তী পোস্টগুলো ফলো করুন ধন্যবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top