বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়নি বলে জানিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য! হয়ে গেল বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যেখানে মোট ২৮ টি দল অংশগ্রহণ করে।

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য

এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন অনেক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। এমনকি সারা বাংলাদেশে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার বিজিবি ও র‍্যাপ মোতায়েন ছাড়াও সারা বাংলাদেশে প্রায় ৩ লাখের মতো নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করে নির্বাচন কমিশন। গেল ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার প্রধান কাজী হাবিব উল আউয়াল এই প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

৭ই জানুয়ারি নির্বাচনকে ইতোমধ্যেই অনেক দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ভারত, চীন, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর। তবে নির্বাচনের একদিন পরে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতামত প্রকাশ করে।নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য যেখানে তারা বাংলাদেশের নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ হয়নি বলে মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিং এ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন গেল ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। তিনি আরো বলেন, এই নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে দূরে রেখে একটি সাজানো নির্বাচন আয়োজন করা হয়। যেখানে আওয়ামীলীগ নিজ দলের প্রার্থীদেরকেই নিজেদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করে।

ম্যাথিউ মিলার আরো বলেন, নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। যেটি পরিষ্কার মানবাধিকার লঙ্ঘন। তিনি বলেন আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সরকার এটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা নির্বাচনকালীন সহিংসতা ও ভোট কারচুপির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি এবং বাংলাদেশ সরকারকে বলব এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট মন্তব্য করতে। যাতে করে মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশে ৭ই জানুয়ারি নির্বাচনে দেশি-বিদেশে মিলে মোট ২০০ জন পর্যবেক্ষক এই নির্বাচনকে পর্যবেক্ষণ করেন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সরকারের আমন্ত্রণে কয়েকজন পর্যবেক্ষক আসে। যে পর্যবেক্ষকগুলো নির্বাচনের পরপরই এক বিবৃতিতে জানায় বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশে অবস্থিত ঐসব দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রশ্ন করা হলে সে সব দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানানো হয়।

যেসব পর্যবেক্ষক ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন তারা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেনের কোন সরকারি কর্মকর্তা বা সরকারি কোন সংস্থার সঙ্গে জড়িত নয়। এই ব্যক্তিগুলো একান্তই নিজেরা নির্বাচনকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য এসেছে এর সঙ্গে কোন দেশের কোন যোগাযোগ নেই।

উল্লেখ্য ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ২৮ টি দল অংশগ্রহণ করে। যেখানে ২৯৯ টি আসনে মোট প্রার্থী সংখ্যা ছিল ১৯৭১ জন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে মোট ২৩৩ টি আসন, জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১ টি, স্বতন্ত্র থেকে পেয়েছে ৫৯টি এবং কল্যাণ পার্টি পেয়েছে ২টি আসন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top