বিড়াল পালন করা কি জায়েজ রাসূলুল্লাহ (সঃ) কেন বিড়াল পুষতে বলেছেন

বিড়াল পালন করা কি জায়েজ

বিড়াল পালন করা কি জায়েজ! বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমরা আলোচনা করবো বিড়াল পুষা হারাম না হালাল।

এবং বিড়াল পালন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে এই নিয়ে কিছু তথ্য। তাই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।নবী করীম (সঃ) বলেছেন বিড়াল নাপাক নয়। এটি তোমাদের আশে পাশে বিচরণ করা প্রাণী (আবু দাউদ আয়াদ ৭৫, তিরমিজি ৯২)। আল্লাহ্‌র রাসুলের প্রিয় সাহাবী আব্দুর রহমান (রা) তিনি জামার ভিতরে পোষা বিড়াল নিয়ে ঘোরা ফিরা করতেন। একদিন তিনি জামার আস্তিনের নিচে একটি বিড়াল ছানা নিয়ে রাসুল (সঃ) এর দরবারে হাজির হন ।

সেই সময় বিড়ালটি হঠাৎকরে বেরিয়ে পরলো। এ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে রসিগতা করে বল্লেন ইয়া আবু হুরায়রা মানে হে বিড়ালের পিতা বলে সম্বোধন করেন। এর পর থেকেই তিনি মূল নামের চেয়ে আবু হুরায়রা নামে বেশি খ্যাতি লাভ করলেন। আর সেই দিন থেকে তিনি নিজেকে আবু হুরায়রা নামে পরিচয় দিতেন।

আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) তিনি যখন ওযু করতেন তখন নিজের ওযুর পাত্র থেকে বিড়ালকে পানি পান করাতেন। এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্যে আজাব দেওয়া হয়েছে। কারন বিড়াল টিকে আটকে রাখায় সেটি মারা গিয়েছিল ফলে সেই মহিলা জাহান্নামে গিয়েছে। বিড়ালটি আটকে রেখে সে খাবার ও পানি দেয় নি আবার ছেরেও দেয়নি যাতে করে জমিনের পোকা মাকড় খেয়ে সে বাঁচতে পারে। (মুসলিম ৭৫৪৫)

হাদিসের ব্যাখ্যা

এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমামা কুরতুবি (রা) বলেছেন। বিড়াল পালা এবং বিড়াল বেঁধে রাখা জায়েছ রয়েছে। যদি তাকে খানা পিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি করা না হয়।( ফাতুল বাররতি ৬-৪১২)

একদিন তার মুনিব তাকে হযরত আশা (রা) কাছে খাবার সহ একটি পাত্র পাঠালেন অতঃপর আমি তার কাছে পৌঁছে দেখতে পাই তিনি নামাজ রত অবস্থায় আছেন। তিনি আমায় পাত্রটি রাখার জন্য সে সময় ইশারা করলেন। ইতি মধ্যেই সেই সময় একটি বিড়াল তা থেকে কিছু খাবার খেয়ে ফেললো । হযরত আয়শা (রা) তিনি নামাজ শেষ করে এসে বিড়ালটি যে পাত্র থেকে খেয়ে ছিল সেখান থেকেই খেলেন এবং বল্লেন নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন বিড়াল অপবিত্র নয় তোমাদের আশে পাশেই ঘোরা ফিরা করে। অতঃপর হযরত আয়শা (রা) তিনি আরও বলেন আমি রাসুল (সঃ) কে বিড়ালের উৎকৃষ্ট পানি দারা ওযু করতে দেখেছি।

তাই কোন খাবারে যদি বিড়াল মুখ দেয় আর খাবারের মালিক যদি ধনী হয় তাহলে ঐ খাবার খাওয়া তার জন্য মাখলুক বা অপছন্দনীয় হবে। কিন্ত খাবারের মালিক যদি গরিব হয়  তাহলে তার জন্য খাবারটি খাওয়া জায়েছ (ফতয়ায় আলমগিরি ৪৩-১)। কিন্তু অপর দিকে কুকুর যদি কোন পাত্রে মুখ দেয় তা অপবিত্র হয়ে যায় এবং ৭ বার তা গুনে গুনে ধুয়ে ফেলতে হবে।

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ (সঃ)এরশাদ করেছেন তোমাদের কারো পাত্রে যখন কোন কুকুর মুখ লাগিয়ে পান করে তখন প্রথম বার পাত্রটি মাটি দিয়ে ভাল করে ঘষে ফেলবে। (সহি মুসলিম ৫৪৯) মাটির যায়গায় এমন যে জিনিস গুলো পাওয়া যায় প্রথমবার সেগুল দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হবে। পরের ৬ বার শুধু পানিই যথেষ্ট । বিড়াল ঘরে থাকলেও নামাজের কোন সমস্যা হয়না।

বিড়াল ঘরের জিনিস পত্ররের অন্তর্ভুক্ত

রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন বিড়াল সালাত বিনষ্ট করেনা। কারন তা ঘরের জিনিস পত্ররের অন্তর্ভুক্ত (সুনানু নাসাই ৩৬৮)। তবে ঘরে কুকুর থাকলে কোন ভাবেই নামাজ হবে না। হযরত আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত তিনি এরশাদ করেছেন জিবরাঈল (আঃ) কোন নির্ধারিত সময়ে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর কাছে আগমনের ওয়াদা করলেন।

কিন্ত যথা সময় তিনি এলেন না। রাসুল (সঃ) এর হাতে একটি লাঠি ছিল তিনি তা হাত থেকে ফেলে দিয়ে বললেন আল্লাহ্‌ তো তার ওয়াদা খেলাফ করেন না তার রাসূল গণনা । এর পর তিনি লক্ষ করলেন বুঝতে পারলেন যে তার খাটের নিচে একটি কুকুর ছানা রয়েছে ।

তখন তিনি বললেন হে আয়শা এখানে কুকুর ছানা এসে কখন ঢুকে পড়ল। তখন আয়শা (রা) বললেন আল্লাহ্‌র কসম আমি জানিনা বাবা তখন তিনি আদেশ দিলে কুকুর ছানাটিকে বের করে দেওয়া হয়।

আর ঠিক তার পরপরই হযরত জিবরাঈল (আঃ) সেখানে এলেন । রাসুলুল্লাহ (সঃ)বললেন আমি আপনাকে বাধা দেয়েছিলাম তাই আমি আপনার প্রতীক্ষায় বসে ছিলাম কিন্ত আপনি এলেন না । তিনি বললেন আপনার ঘরের কুকুরটি আমার জন্য প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছিল। কারন যেই ঘরে কোন ছবি কিংবা কুকুর থাকে সেই ঘরে আমরা রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করিনা। (সহি মুসলিম ৫২৪৬)

বিড়াল এবং কুকুর নিয়ে ব্যবসা করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ

বিড়াল কুকুর বেচাকেনা করা হারাম। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বিড়াল আহার করা এবং এর মূল্য ভোগ করেত তিনি নিষেধ করেছেন ( তিরমিজি ১২৮০ )।

রাসুলুল্লাহ (সঃ) কুকুর এবং বিড়াল বিক্রয়ের বেপারে নিষেধাজ্ঞা জ্ঞাপন করেছে (তিরমিজি ১২৭৯)। কেউ বিড়াল পালতে চাইলে আশে পাসে লক্ষ লক্ষ বিড়াল রাস্তায় পরে আছে । সেখান থেকেই পাবেন। এই সব বিড়াল দেড়কে ঘরে জায়গা করে দিতে পারেন। তাদের থাকার ভাল জায়গা হবে। মিছি মিছি বিড়াল কিনে অপচয় ও পাপ কামাই করার কোন দরকার নেই।

বন্ধরা আমরা সকলই বুঝতে পারছি বিড়াল কোন অপবিত্র প্রাণী নয়। আমরা হয়তো এতদিন না জেনেই বিড়ালকে অপবিত্র ভাবতাম। আর বিড়াল থেকে পানাহার এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহ্‌ তালা সম্পূর্ণ নিষেধ করেছেন। আমরা যেন ভুলেও এ পাপের কাজ না করি সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখবো। ইসলাম নিয়ে এরকম জানা অজানা বিষয় জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top