যে একটি কাজে বিনা হিসাবে ৭০ হাজার লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে

বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে কারা

বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে কারা! প্রিয় বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা জানব বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে ৭০ হাজার লোক তারা কারা সে সম্পর্কে। কেয়ামতের দিনটি হবে ভয়াবহ ও বিভীষিকাময়। সেদিন ভয়ে ও আতঙ্কে সবাই ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি করতে থাকবে।

বিচার দিবসে সূর্যকে মানুষের কাছে আনা হবে। তা হবে তাদের থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে। আমল অনুযায়ী ঘামের মধ্যে অবস্থান করবে মানুষ। কারো ঘাম হবে টাকনু সমান, কারো হাটু সমান, কারো কোমর সমান, কারো মুখ সমান। এই হাদিসটি নেওয়া হয়েছে মেশকাত শরীফ থেকে।

হাশরের দিন ভয়ে প্রত্যেকে বলতে থাকবে আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান। মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু উম্মত নিয়ে চিন্তা করবেন। হাদিসটি নেওয়া হয়েছে বুখারী শরীফ থেকে।

কিন্তু এই কঠিন দিনেও কিছু মানুষের বিচার হবে না। হাদিস অনুযায়ী বিনা হিসেবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন। কিন্তু কারা সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, একদিন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমার কাছে সব উম্মতের লোকদেরকে উপস্থাপন করা হলো।

আমি দেখলাম কোনো নবীর সঙ্গে মাত্র তিন থেকে সাতজন অনুসারী আছে। কোনো নবীর সঙ্গে আছে একজন বা দুইজন। কোন নবীর সঙ্গে দেখলাম কেউ নেই। ইতোমধ্যে বড় একটি জামাত আমার সামনে পেশ করা হলো।

আমি মনে করলাম এটাই বুঝি আমার উম্মতের জামাত। কিন্তু আমাকে বলা হলো যে এটা মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার উম্মতের জামাত। আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।

অতঃপর আমি সেই দিকে তাকাতেই এক বিরাট জামাত দেখতে পেলাম। আমাকে তখন বলা হলো এরা আপনার উম্মত আর তাদের সঙ্গে এমন ৭০ হাজার লোক আছে যারা বিনা হিসাবে ও বিনা আজাবে সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ কথা বলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে নিজের ঘরে প্রবেশ করলেন।

এদিকে উপস্থিত সাহাবীরা জান্নাতি লোকদের ব্যাপারে তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলো। কারা হবে সেই সৌভাগ্যবান লোক যারা বিনা হিসাবে বিনা আজাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কেউ কেউ বললো সম্ভবত ঐ সব ব্যক্তি তারা যারা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবা।

কিছু লোক বললো বরং সম্ভবত ওরা হলো তারা যারা ইসলাম ধর্মে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সঙ্গে কখনো কাউকেই শরিক করেনি। এভাবেই অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছুক্ষণ পরে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে বের হয়ে এসে বলেন তোমরা কি ব্যাপারে আলোচনা করছো। উপস্থিত সাহাবীরা রাসূলুল্লাহর কাছে ব্যাপারটি খুলে বললে আল্লাহর রাসূল বলেছেন বিনা হিসাবে জান্নাতি লোক হল তারা যারা,

১/ দাগ কেটে রোগের চিকিৎসা করেনা

 ২/ অন্যের কাছে রুকাইয়া বা ঝাড়ফুঁক করে দিতে বলে না

 ৩/ হঠাৎ কোন জিনিসকে অশুভ লক্ষণ বলে মনে করে না

৪/ বরং তারা শুধু আল্লাহর উপরে ভরসা রাখে।

এসব শুনে একজন সাহাবী উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন হে আল্লাহর রাসূল আপনি আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ যেন আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন। উত্তরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন তুমি তাদের মধ্যে একজন। অতঃপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল আপনি আমার জন্য দোয়া করুন যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে নেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন উক্কাসা এ ব্যাপারে তোমার অগ্রগামী হয়েছে।এই হাদিসটি নেওয়া হয়েছে বুখারী শরীফ থেকে।

আল্লাহতালা মুসলিম উম্মাহকে ঝাড়ফুক, অশুভ লক্ষণ, ইত্যাদি ঘৃণ কাজ থেকে বিরত থাকার এবং মহান সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করার তৌফিক দান করুক আমিন।

বন্ধুরা এই আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যেসমস্ত ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে এবং সকল কাজে আল্লাহকে বিশ্বাস করে তারাই শুধুমাত্র বিনা হিসাবে রোজ হাশরের ময়দানে জান্নাতে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রাখব এবং তার রাসুলের দিক নির্দেশনা মেনে চলব।

ইনশাল্লাহ এসব দিক নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে আমরাও সেই ৭০ হাজার ব্যক্তির মধ্যে একজন বলে আল্লাহর কাছে মনোনীত হতে পারি। তাই নিজের প্রতি আস্থা রাখুন এবং আল্লাহর দেওয়া দিক নির্দেশনায় নিজের জীবনকে অতিবাহিত করার চেষ্টা করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top