রোজার গুরুত্ব ও রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাসের ফজিলত, ইসলাম ধর্মকে বলা হয় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং সন্মানের ধর্ম। যে ধর্মের মধ্যে আল্লাহতালা নারী-পুরুষ বাবা-মা স্বামী স্ত্রী সকলেরই সমান অধিকার সম্পর্কে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

এসবের পাশাপাশি আল্লাহতালা তার প্রিয় বান্দাদেরকে কিছু দিকনির্দেশনা সম্পর্কে স্পষ্ট ও কঠোরভাবে পবিত্র কোরআন শরীফে বলেছেন। তিনি বলেন ইসলামের ছায়াতলে যে সকল মুমিন ব্যক্তিরা অবস্থান করবে তারা অবশ্যই আল্লাহর দেওয়া পাঁচটি বিষয়কে কখনো অস্বীকার করতে পারবে না।

আর এই পাঁচটি বিষয়কে আল্লাহতালা ইসলামের পাঁচটি খুঁটির সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর তা হল ঈমান, নামাজ, যাকাত, রোজা ও হজ। এই পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। আল্লাহ মুসলিম জাহানের জন্য রোজাকে এক অতুলনীয় নিয়ামত হিসেবে দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যারা এই রমজান মাসে একটি ভালো কাজ করবে তারা একটি ভালো কাজের বিনিময়ে দশটি সওয়াব অর্জন করবে।

আজকে আমরা আপনাদেরকে এই পোস্টের মাধ্যমে রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। সেই সঙ্গে আরো জানানোর চেষ্টা করা হবে কিভাবে রোজার মাধ্যমে গরীব দুঃখীদের ভেদাভেদকে দূর করা যায়। বন্ধুরা চলুন তাহলে শুরু করি আজকের পোস্টটি।

হাদীস শরীফে উল্লেখ করা রোজার কিছু ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো। আমরা এই ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ। চলুন জেনে নেই রোজার ফজিলত।

১/ রোজার প্রতিদান আল্লাহতালা নিজ হাতে দেবেন

আল্লাহতালা ঘোষণা করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহকে রাজি ও সন্তুষ্টি করার জন্য রোজা রাখল সে ব্যক্তি যেন আল্লাহর অনেক নিকটে চলে গেল।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমাকে খুশি করার জন্য যে বান্দা সারাদিন না খেয়ে আমার ইবাদত করলো তাকে আমি নিজ হাতেই প্রতিদান দেব। আর সে প্রতিদান হবে বান্দার প্রত্যাশার চেয়েও অনেক অনেক বড়। কার্যত আমরা যখন অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিগুলো করি সেগুলোর মধ্যে আমাদের অন্তরের মধ্যে সামান্য কিছু হলেও রিয়ার জন্ম হয়।

কিন্তু রোজা এমন এক ইবাদত যেটা পালন করার মাধ্যমে বান্দার মনে কোন খারাপ চিন্তা স্থান করতে পারেনা। আর এ কারণে আল্লাহর কাছে রোজা রাখা ব্যক্তিরা অনেক প্রিয় হয়ে থাকে। আর আল্লাহতায়ালা নিজ হাতে এর প্রতিদান দিবে বলে কথা দিয়েছে।

২/ রোজাদারকে আল্লাহতালা কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আল্লাহকে খুশি করার জন্য রোজা রাখল আল্লাহতালা হাশরের ময়দানে তাকে জমজম থেকে পানি পান করাবেন। আর এ পানি রোজাদার ব্যক্তি ছাড়া আর কাউকে পান করানো হবে না।

৩/ রোজা হল জান্নাতের পথ

হযরত হুযায়ফা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন একদিন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লামকে আমার বুকে জড়িয়ে নিলাম, ঠিক এই সময়ের রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেন যে ব্যক্তি রোজা রেখে মৃত্যুবরণ করে সে নিশ্চিত জান্নাতে প্রবেশ করবে,

যে ব্যক্তি কালিমা পড়তে পড়তে মৃত্যুবরণ করবে সে নিশ্চিত জান্নাতে প্রবেশ করবে, যে ব্যক্তি দান সদকা করে মৃত্যুবরণ করবে সে নিশ্চিত জান্নাত প্রবেশ করবে। আমরা সকলে জানি আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসে সকল মৃত ব্যক্তিদেরকে কবরের আজাব থেকে মুক্ত করে দেন। আর এই সময় আল্লাহতালা শয়তানকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। তাই রমজানের গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি।

৪/ রোজাদারগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে রাইয়ান নামক দরজা দিয়ে

হাশরের ময়দানে রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য জান্নাতের এক বিশেষ দরজা খুলে যাবে। যে দরজার নাম হবে রাইয়ান। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করা শেষ হলে দরজাটি আল্লাহতালার নির্দেশে বন্ধ হয়ে যাবে।

৫/ রোজা হল জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল

হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে ব্যক্তি রোজা রাখল সে যেন রোজ হাশরের ময়দানে একটি ঢাল অর্জন করল। অর্থাৎ আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পেল। আর যেহেতু আল্লাহতালা বলেছেন রোজা আমার জন্য আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব তাই রোজাদার ব্যক্তিদের শাস্তি হাশরের ময়দানে অনেক কম করা হবে।

বন্ধুরা এরকমই অনেক ফজিলত রয়েছে আমাদের এই রমজানকে মাস কেন্দ্র করে। আমরা যেন এই রমজান মাসের সকল রোজাগুলো আল্লাহকে খুশি ও সন্তুষ্টি করার জন্য রাখতে পারি এই শপথ নেই।

রমজান মাসে গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করার পাশাপাশি আমরা যেন সকল ভাল কাজগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারি সেদিকে চেষ্টা করব। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই আপনারা অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করুন এবং তার জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ সকলকে হেদায়েত দান করুন আমীন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top