ইংল্যান্ডের সংস্কৃতি ও অজানা কিছু ঐতিহাসিক তথ্য

ইংল্যান্ডের ইতিহাস

ইংল্যান্ডের ইতিহাস! হ্যালো বন্ধুরা আপনারা যারা ইংল্যান্ড দেশ সম্পর্কে জানার জন্য কমেন্ট করেছেন মূলত তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি আপনারা যারা ইংল্যান্ড দেশকে অজানা কিছু তথ্য বা ঐতিহাসিক কিছু তথ্য জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক  ইংল্যান্ডের ইতিহাস সম্পর্কে আজকের পোস্টি-

১৭০৭ সালের পূর্বে ইংল্যান্ড একটি আলাদা দেশ ছিল

বেশির ভাগ লোক এটা জানে যে ইংল্যান্ড একটি দেশের নাম। কিন্তু ইংল্যান্ড একটি দেশ নয়। তো আজকে বলবো ইংল্যান্ড সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য যা মনে হয় আপনি আগে জানতে না।

আসলে ইংল্যান্ড ইউনাইটেট কিংডমের একটি অংশ। যেটা চারটি আলাদা আলাদা প্রদেশ যেমন- ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস আর নর্দান আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে বানানো হয়েছে। শুধু এটাই নয় ইংল্যাল্ডের ফ্লাগ ও ইউ.কে থেকে যথেষ্ট আলাদা। ইংল্যান্ডের পতাকায় শুধু ইংল্যান্ড দেশকে বোঝায়।

কিন্তু ইউ.কে এর পতাকায় চারটি দেশকেই বোঝানো হয়। চার দেশের নিয়ম-কানুন একটি অন্যটির থেকে যথেষ্ট আলাদা।যেমন- ইংল্যান্ডে ইংলিশ আইন, নর্দান আয়ারল্যান্ডে আয়ারল্যান্ড আইন, স্কটল্যান্ডে স্কট আইন। ব্রিটেনের মহারানী এলিজাভেদ একমাত্র নাগরিক যে কিনা বিনা পাসপোর্টে যেকোনো দেশে যেতে পারবে।

ব্রিটেনের পোস্টাল স্টাম্পে পৃথিবীর একমাত্র স্টাম্প যেটাতে কোনো দেশের নাম লেখা থাকে না। ১৭০৭ সালের পূর্বে ইংল্যান্ড একটি আলাদা দেশ ছিল। কিন্তু ১৭০৭ সালে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড এক সাথে মিলে গেছে। আর এই নতুন দেশ রেড ব্রিটেন নামে পরিচিতি লাভ করেছে।

১৮০০ সালে আয়ারল্যান্ডও রেড ব্রিটেন সাথে মিলে যায়। আর এর নতুন নাম হয় ইউনাইটেট কিংডম বা ইউ.কে। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ৫৫ লাখ। এর ক্যাপিটেল আর সবচেয়ে বড় সিটি হলো লন্ডন। যেটা পুরো পৃথিবীতে একটি ফ্যামাস সিটি নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এক সময়ে এই ইংল্যান্ড পুরো পৃথিবীতে নিজের সাম্রাজ্য বানিয়ে ফেলেছিল।

এক পাউন্ড বাংলাদেশের প্রায় ১১১ টাকার সমান

এই পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে এই আজব ব্রিটিশ রীতি কালচার দেখা যায়। ইংল্যান্ডের কারেন্সি হলো পাউন্ড। এক পাউন্ড বাংলাদেশের প্রায় ১১১ টাকার সমান। এক সময়ে ইংল্যান্ডে এক মহামারী রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। স্কটল্যান্ড এর ফায়দা উঠানোর জন্য এই দেশের উপর হামলা করেছিল। ইংল্যান্ডকে তারা তাদের কবজায় করে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই হামলায় স্কটল্যান্ডের সৈনিকদের ওই রোগ হয়ে গিয়েছিল।

আর সৈনিকদের থেকে এই রোগ পুরো স্কটল্যান্ডে ছড়িয়ে যায়। এই রোগের কারণে স্কটল্যান্ডে প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা মারা গিয়েছিল। ইংল্যান্ডে বাচ্চাদের পাঁচ বছর বয়স থেকেই প্রাইভেট জায়গায় মদ পান করার বৈধতা রয়েছে। জনপ্রিয় ফাস্টফুড খাবার স্যান্ডউইচ এর আবিষ্কার ইংল্যান্ডে হয়েছিল।

আর স্যান্ডউইচকে সর্বপ্রথম আবিষ্কার করা হয়েছিল ১৮ শতকে।আর কিটকাট নামের ফ্যামাস চকলেট ও ইংল্যান্ডের। ইংল্যান্ডের অফিসিয়াল নাম হলো ইংলিশ। প্রায় ৩০০ বছর আগে ইংল্যান্ডের মূল ভাষা ছিল ফ্রেন্স। এছাড়াও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের অফিসিয়াল ভাষাও ইংলিশ।

আর পৃথিবীর সবদেশ গুলোর সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ হলো ইংলিশ। ইংল্যান্ডের অর্থব্যবস্থা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং ধনী অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়।এর রাজধানী লন্ডনকে পৃথিবীর ফাইনানশিয়াল সেন্টারও বলা হয়ে থাকে। সাইন্স ও টেকনোলোজিতে ইংল্যান্ডে যথেষ্ট পরিমাণ দক্ষতা রয়েছে।

আর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাইন্টিস স্যার আইজ্যাক নিউটন, মাইকেল ফ্যারেডে, চালর্জ ডারউইন ইংল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন। দৈনন্দিন জীবনে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস ইংল্যান্ডে আবিষ্কার হয়েছিল।যেমন-রেলওয়ে, কম্পিউটার, জেট ইঞ্চিন, ওয়াল্ড ওয়াইট ওয়েব অর্থাৎ ডাব্লু ডাব্লু ডাব্লু আর এস টি এম এম। ইংল্যান্ডের মূল আয়তন ১৩০২৭৯ বর্গকি.মি.। এই দেশের মোট জনসংখ্যা ৬০% খ্রিষ্টান। আর এখানকার দ্বিতীয় বড় ধর্ম হলো ইসলাম যা মূল জনসংখ্যা ২১%।

ইংল্যান্ডের মুসলিমদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে

আর বিশেষ করে লন্ডনে মুসলিমদের সংখ্যা ১২.৪%।এছাড়াও ১.৫০% মুসলিম ওয়েলস ও ১.৪৫% স্কটল্যান্ডে এবং ০.২১% নর্দান আয়ারল্যান্ডে বাস করে। এছাড়াও লন্ডনের ইতিহাসে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র এক মুসলমান সাদিক খানকে বানানো হয়েছিল। চায়ের উৎপাদনে ইন্ডিয়া এক নাম্বরে রয়েছে। আর চা পান করার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড সবার উপরে রয়েছে।

ইংল্যান্ড এক সময়ে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশগুলো রাজত্ব করতো। বর্তমানে ৪৮ টি দেশ তাদের স্বাধীনতা দিবস পালন করে ইংল্যান্ডের কাছে স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য।

বর্তমানে ইংল্যান্ড একটি পাওয়ারফুল দেশে পরিণত হয়েছে। ডেভলপমেন্টে এই দেশ যথেষ্ট পরিমাণে এগিয়ে গেছে। ইংল্যান্ডে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। লন্ডনে বসবাসরত লোকসংখ্যার মধ্যে ২৫% লোকই বিদেশী। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো চিড়িয়াখানা ইংল্যান্ডে রয়েছে। প্রসিত রাইটার সেক্স পিওর এর জন্ম ইংল্যান্ডে হয়েছিল।লন্ডনে অবস্থিত লন্ডন আই.কে পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিসের মধ্যে একটি বলা হয়।

আর এটা একবার ঘুরে আসতে ৩০ মিনিট সময় লাগে। ইংল্যান্ডের অর্থব্যবস্থার ২০% শুধু লন্ডন থেকেই আসে। আর এই শহর পৃথিবীর দামী শহরগুলোর মধ্যে একটি। প্রতি বছর ইংল্যান্ডে দেড় কোটির মতো পর্যটক বেড়াতে যায়। ইংল্যান্ড ইউএসএ থেকে ৭৪ গুণ, অস্ট্রেলিয়া থেকে ৫৯ গুণ আর জাপান থেকে ৩ গুণ ছোট দেশ। ইংল্যান্ডে ইংলিশ ভাষা ছাড়াও ৩০০ টির মতো ভাষার প্রচলন রয়েছে।

ইংল্যান্ডের একটি বদনামী রাজা রিচার্ড থার্ডে

ফ্রান্স আর ইংল্যান্ডে মধ্যে মাত্র ৩৬ কি.মি দূরত্ব। যেটার একটি চ্যানেল টানেলের সাথে যুক্ত হয়েছে। এটা ১৯৯৪ সালে ওপেন করা হয়েছিল। সবথেকে আজব ব্যাপার হলো এটাই যে, ইংল্যান্ডে প্রতি বছর মিথ্যা কথা বলার প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। আর এটাতে অংশগ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন আসে। আর তাদের পাঁচ মিনিট ধরে বিশ্বাস করার মতো মিথ্যা কথা বলে যেতে হয়। ইংল্যান্ডের একটি বদনামী রাজা রিচার্ড থার্ডের লাশ গায়েব হয়ে গিয়েছিল।

৫০০ বছর পরে ২০১২ সালে একটি পার্কিং স্থানের জায়গায় তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল। ইংল্যান্ডের ফ্যামাস একটি জায়গা স্টোন হিনস। এই জায়গা পর্যটকদের আকর্ষিত করে থাকে। আপনাকে এখানে যাওয়ার জন্য এডভান্স টিকেট নিতে হবে। খেলাধুলার ব্যাপারে ইংল্যান্ড বেশ এগিয়ে আছে। ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় খেলা ফুটবল ও ক্রিকেট এই দেশেই আবিষ্কার হয়েছিল। এছাড়াও রাগবি, ট্যালেন্ট, হকি, তিরান্দাজ, ইত্যাদি খেলার জন্ম হয়েছে ইংল্যান্ডে।

ইংল্যান্ডের ইতিহাস

ফুটবল ইতিহাস-ফুটবল ইতিহাসে ইংল্যান্ড প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ১৮৭২ সালে স্কটল্যান্ডের সাথে। আর বৃহত্তম জয় পায় আয়ারল্যান্ডের বিপরীতে ১৩-০ গোলে। ইংল্যান্ড মাত্র ১ বার ফিফা বিশ্বকাপ জিতেছে ১৯৬৬ সালে। স্বাগতিক দেশ হিসেবে জামার্নিকে হারিয়ে তারা ফুটবল ওয়ার্ল্ডকাপ চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল। এছাড়াও বেশ দাপটের সাথে ক্রিকেট খেলে যাচ্ছে ইংল্যান্ড।

ক্রিকেট ইতিহাস-দেশটি প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলে ১৮৫৯ সালে। এরপর থেকে ধীরে ধীরে টেস্ট, ওয়ান-ডে এবং টি-২০ নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছেন ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের জাতীয় সংগীত হলো God Save The Queen. এছাড়াও ইংল্যান্ডে ০.৮% বাঙালি বসবাস করে।

বন্ধুরা এই ছিল ইংল্যান্ড সম্পর্কে দারুণ কিছু তথ্য। আলোচনাটি ভাল লাগলে কমেন্টে তা জানিয়ে দিতে ভুলবেন না এবং বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর আমাদের ওয়েব সাইট যুক্ত থাকবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজের খেয়াল রাখবেন বাই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top