জ্বিন জাতিরা বাড়ির যে দুই জায়গায় বসবাস করে

জ্বিন জাতিরা কোথায় বসবাস করে

জ্বিন জাতিরা কোথায় বসবাস করে! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে যে আলোচনাটি করব সেটি হচ্ছে বাড়ির যে দুটি জায়গায় জ্বিনেরা বসবাস করে এবং আপনাদেরকে জানাবো কি কাজ করলে এরা খুবই বিরক্ত হয় এবং কিভাবে এই দুষ্টু জ্বিনদের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি।

আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেন, আমিন জ্বিন জাতি এবং মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য। আমি আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত বন্দেগী করা যাবেনা। আমি আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে কোন কিছু চাওয়া যাবে না।

যে মানবজাতি এবং জ্বিন জাতিকে আল্লাহতালা সৃষ্টি করেছেন আল্লাহর এবাদত বন্দেগী করার জন্য সেই জ্বিন জাতি এবং মানব জাতিকে দিয়েই আল্লাহতালা আবার জাহান্নাম পূর্ণ করবেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন বলেন, এই জ্বিন জাতি এবং মানবজাতিকে দিয়েই আমি আমার জাহান্নাম পূর্ণ করব।

এই জিন জাতিকে আল্লাহতালা এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যারা আমাদের কাছাকাছি থাকলেও আমরা তাদের দেখতে পাই না। কিন্তু তারা আমাদেরকে দেখতে পায়। প্রিয় বন্ধুরা আপনার ঘরের দুটি জায়গাতে জ্বিনরা বসবাস করে। খবরদার এই জ্বিনদের কখনই বিরক্ত করবেন না এবং তাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দোয়া পরবেন। আর তা যদি না করেন তাহলে কিন্তু তারা আপনার ক্ষতি করতে পারে।

জ্বিন জাতিদের বিভিন্ন আকৃতি

মানবজাতি সৃষ্টির অনেক আগে থেকেই  আল্লাহ রব্বুল আলামীন এই জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছিলেন শুধুমাত্র তার ইবাদত বন্দেগী করার জন্য।

যখন দেখলেন এই জ্বিন জাতি ইবাদাত বন্দেগীতে মশগুল না থেকে মারামারি করে কাটাকাটি করে রক্তপাত ঘটায়। তখন আল্লাহতালা সিদ্ধান্ত নিলেন এই জ্বিন জাতিকে মেরে ফেলা হোক। এরপর আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের পাঠালেন এই জ্বিন জাতিকে মেরে ফেলার  জন্য। তারপর কিছু জ্বিনকে ফেরেশতারা মেরে ফেললেন এবং কিছু জ্বিনকে অনেক দূরে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হল।

সেই পালিয়ে যাওয়া জ্বিনগুলো এখনও এই পৃথিবীতে রয়েছে। তারপর আল্লাহ তাআলা বললেন এদেরকে আর মেরো না। এদেরকে ছেড়ে দাও। এরপর আল্লাহ কয়েক হাজার বছর পরে এই দুনিয়ার বুকে মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন। জ্বিন জাতি এবং মানব জাতিকে আল্লাহতালা সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার ইবাদত বন্দেগী করার জন্য। এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে জ্বিন জাতিকে আমরা দেখতে পাই না।

আসলে আমরা জ্বীনদেরকে দেখতে না পেলেও জ্বীন জাতিরা কিন্তু আমাদেরকে ঠিকই দেখতে পায়। আবার কখনো কখনো তাদেরকে আমরা দেখতে পাই মানবাকৃতিতে বা বিভিন্ন প্রকার ছায়ার আকৃতিতে অথবা বিভিন্ন প্রকার প্রাণীর আকৃতিতে আমরা আমাদের কাছে তাদেরকে আসতে দেখি।

খারাপ জ্বীনদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া

জ্বিন জাতিরা কোথায় বসবাস করে অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন জ্বীনরা কোন জায়গায় বসবাস করে। আসলেই জ্বিনরা আমার আপনার বাড়ির কয়েকটি জায়গায় বসবাস করে থাকে। এছাড়া যখন ফেরেশতারা দুনিয়ায় এসে জ্বীনদেরকে বিনাশ করলেন এবং যে জ্বিনগুলো পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ বনে জঙ্গলে চলে যায় এবং কেউ কেউ পাহাড় পর্বত অথবা বিভিন্ন দ্বীপে চলে যায়।

ফলে এখনো পর্যন্ত কিছু জ্বিন বনে জঙ্গলে বসবাস করে। কিছু জ্বিন মরুভূমিতে বসবাস করে অথবা বিশাল সমুদ্রের দ্বীপের মাঝে তারা বসবাস করে। আবার রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিছু খারাপ জ্বিন রয়েছে যারা টয়লেট, প্রসাব খানা, ময়লা ফেলার স্থান অথবা ময়লা জায়গায় বসবাস করে।

এজন্য রাসুলুল্লাহ ( সাঃ) বলেছেন, তোমরা যখন টয়লেটে যাবে তখন খারাপ জ্বীনের কাছ থেকে আল্লাহতালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং বলবে “””আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবাইস”””। অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি কদাচারী ও নাপাক শয়তান হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এই দোয়াটি শিখে দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। এই দোয়াটি পড়ে যদি প্রসাব অথবা টয়লেট খানায় যান তাহলে খারাপ প্রকৃতির জ্বিনগুলো আপনার ক্ষতি করতে পারবেনা ইনশাল্লাহ।

সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পড়ে পানিতে দম দিয়ে খাওয়া

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম জ্বিনদের স্পষ্ট দেখতে পেতেন। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ তা কখনো দেখতে পাইনা। অনেক সময় দেখবেন আমাদের অনেককেই  জ্বিনে আক্রমণ করেন। এমনকি ছোট বাচ্চাদেরকে বেশি জ্বিনরা আক্রমণ করে থাকে।

এর একমাত্র কারণ হচ্ছে মানুষের মতো জ্বীনদের মাঝেও কিছু খারাপ প্রকৃতির জ্বিন রয়েছে। এই খারাপ জিনদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর নির্দেশিত দোয়াটি পড়বেন। আর যে কোন প্রকার জ্বিন ঘঠিত জাদু টোনার হাত থেকে রক্ষা পেতে সূরা নাস এবং সূরা ফালাক করে পানিতে দম করে খাবেন। অথবা বুকে ফু দিবেন।

আয়াতুল কুরসী এবং সূরা ফাতিহা পাশাপাশি করে আমল করতে পারেন। ইনশাল্লাহ সূরা নাস এবং সূরা ফালাক এর বরকতে যাবতীয় সকল প্রকার জ্বিনের অনিষ্ট থেকে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের রক্ষা করবেন।

প্রিয় বন্ধুরা আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা স্পষ্ট ভাবে জানতে পারলেন যে পৃথিবীতে জ্বিন জাতিরা কোন কোন জায়গায় বসবাস করে। আমি আপনাদের বলব অবশ্যই খারাপ প্রকৃতির জ্বিনদের কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং আল্লাহ তায়ালার দিক নির্দেশনাগুলো এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর নির্দেশিত আমল গুলো নিয়মিত করলে আপনি এই সমস্ত খারাপ জ্বিনদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। আশা করি পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। ইসলাম সম্পর্কে এরকম নিত্যনতুন পোস্ট পেতে চাইলে আমাদের সাইটটি ফলো করে সঙ্গেই থাকুন ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top