সাগর তলে ভয়াভয় দানবদের বিচরণ বিজ্ঞানীরা হলেন অবাক

সাগর তলে কি আছে

সাগর তলে কি আছে! গভীর সমুদ্রে যে কত প্রকারের অজানা আর আশ্চর্য সব প্রাণীর বসবাস তা কখনো মানুষ জানতে পারবে কিনা সে কথার উত্তর সঠিকভাবে কেউই দিতে পারেনি। এক দল গবেষক গভীর সমুদ্রে গিয়ে এরকমই কয়েক প্রজাতির আশ্চর্য প্রাণী খুঁজে বের করেছেন।

মানুষের কাছে যা অজানা ছিল। দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞানীরা কঠোর পরিশ্রম করে সমুদ্রের তলদেশ থেকে এসব প্রাণীর জীবন বৈচিত্র্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছে। বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো এরকমই রহস্যময় কিছু দৈত্যাকৃতির প্রজাতি যেগুলো সমুদ্রের তলদেশে অনেক গভীরে পর্যন্ত বিচরণ করে থাকে এবং শিকারের জন্য ফাত পেতে দেয়। তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সব দৈত্যাকৃতির প্রাণী সম্পর্কে।

হারপ  স্পন্স

 এদেরকে দেখে মনে হতে পারে এরা কোন সামুদ্রিক উদ্ভিদ বা শৈবাল কিংবা প্রবাল হয়তো হবে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে এরা আসলে সামুদ্রিক প্রাণী, উদ্ভিদ বা কোন শৈবাল নয়।

হারপ স্পন্স নামে এই প্রানি সাগরের ১০ থেকে সাড়ে ১১ হাজার ফিট নিচে বসবাস করে। এই প্রাণীগুলো তাদের তুলনায় অনেক বড় এবং শক্তিশালী সামুদ্রিক প্রাণীগুলোকে স্বীকার করে খেয়ে ফেলতে পারে।

গাছের ডালের মতো তাদের শরীরের হুক কাজে লেগিয়ে তারা তাদের শিকারকে আঁকড়ে ধরে রাখে। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের স্বীকার দুর্বল হয়ে পড়ে। একটা পর্যায়ে তাড়া তাদের শিকারের শরীর থেকে আমিষ শুষে নেয়।

হারপ  স্পন্স

প্যাসিফিক ভাইপার ফিশ

এর মুখ অনেক বড়। দাঁতগুলো ছুঁইয়ের মত। এটা একটা শিকারি মাছ। সমুদ্রের ৫ হাজার ফুট গভীরে এদের বসবাস। শিকারের সময় এই মাছটি হা করে থাকে এবং ছোট ছোট মাছ তাদের মুখে ঢুকতে থাকে। এ সময় দাঁতগুলোকে তারা খাঁচার মতো ব্যবহার করে।

প্যাসিফিক ভাইপার ফিশ

ফ্যান্টম জেলিফিশ

দৈত্য আকৃতির ফ্যান্টম জেরিফিস সমুদ্রের ৩২০০ ফিট গভীরে এদের পাওয়া যায়। এদের কলসিকা ৩৩ ফিট লম্বা হয়ে থাকে। এরা ছোট মাছ এবং প্লাংকটন খেয়ে থাকে। সাগরের ২১ হাজার ৯০০ ফিট গভীর পর্যন্ত যেতে পারে এই মাছ।

ফ্যান্টম জেলিফিশ

স্কুইড

এই মাছটি ৪৩ ফুট লম্বা হয় এবং ওজন ১ টন হয়ে থাকে। এরা দিনে মাত্র একআউন্স পরিমাণ মাছ খেয়ে থাকে। সমুদ্রের তলদেশের সর্বস্থানে এরা গমন করে থাকে এবং শিকারের জন্য ফাত পেতে দেয়। যেহেতু এদের খাদ্য তালিকায় সীমিত সংখ্যক মাছ প্রয়োজন হয় তাই খাদ্যের জন্য এরা অন্যান্য শিকারি মাছের মত ব্যাকুল হয়ে পড়ে না।

স্কুইড

গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর

সমুদ্রের ৭ হাজার ২২০ ফিট গভীরে এদের বাস। আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় যে গতিতে হাটি তার চেয়েও দ্বিগুণ ধীরগতিতে  এই প্রজাতির মাছগুলো চলাচল করে।

এদের গতিবেগ ঘন্টায় ১.২ কিলোমিটার। এত ধীরগতিতে চলার কারণ এরা শক্তি সঞ্চয় করে। এই প্রজাতির মাছ প্রায় ৪০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এবং প্রতিবছর এরা প্রজনন করে থাকে।

গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর

আইসোপড

এই প্রজাতির মাছগুলো একেবারে সাগরের তলদেশে বিচরণ করে থাকে। এরা এক ফুট লম্বা হয়ে থাকে। এদের দেহ এমনভাবে তৈরি যে তারা পাঁচ বছর পর্যন্ত কোন রকম খাদ্য গ্রহণ ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে।

আইসোপড

ব্যারেল আই ফিশ

সাগর তলে কি আছে এই প্রজাতির মাছদের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হলো এদের মাথার দিক অস্বাভাবিক ভাবে স্বচ্ছ। যার ফলে মাথার ভেতরে তো দেখা যায়ই সঙ্গে বেলুন আকৃতির চোখ দুটো স্পষ্ট দেখা যায়।

হুট করে এই প্রজাতির মাছদেরকে দেখলে মনে হবে কোন খেলনা বা ফ্যান্টাসির জগত থেকে উঠে আসার কোন কিছু। সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ মিটার গভীরে এদের বসবাস। ১৯৩৯ সালে এই প্রজাতিটি আবিষ্কৃত হলেও ক্যামেরার সামনে প্রথম ধরা পড়ে ২০০৪ সালে।

ব্যারেল আই ফিশ

সমুদ্র মানেই রহস্য। গভীর সমুদ্রের কালো অন্ধকারে কোন কোন প্রাণীদের বসবাস তার কূল কিনারা আজও করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

গভীর সমুদ্রে এমন অনেক প্রাণী আছে যাদের নাম কখনো শোনা যায়নি। এরা দেখতে যেমন অদ্ভুত তেমনি এদের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হয়ে থাকে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এত কম তাপমাত্রাতেও বেঁচে থাকতে পারে তারা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top